বিশ্বনাথ প্রতিনিধি:
আজ সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে । রায়ে ৮ জন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ৭ জন আসামিকে যাবজ্জীবন এবং১৭ জন আসামিক ২ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৩য় আদালতে ভারপ্রাপ্ত জজ সৈয়দা আমিনা ফারহিন এই রায় ঘোষণা করেন।
সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বাদী পক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবী গফুর মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মামলায় ৩৪ জন আসামির মধ্যে আদালত ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। বাকি ১৭ জনকে ২ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সাইফুল আলম, নজরুল আলম, সদরুল আলম, সিরাজ উদ্দিন, জামাল মিয়া, আব্দুল জলিল, আনোয়ার হোসেন ও মামুনুর রশীদ। এরমধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মামুনুর রশীদ পলাতক রয়েছেন। প্রধান আসামি যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুল আটকের পর থেকে প্রায় পৌনে ৪ বছর ধরে জেল হাজতে রয়েছেন। গত ১৩ জুলাই মামলাটির যুক্তিতর্ক শেষ হলে আজ রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের পহেলা মে সাইফুল ও তার বাহিনী চাউলধনী হাওরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চৈতনগর গ্রামের ইব্রাহিম আলী সিজিল গংদের নিজস্ব রেকডীয় ভূমিতে জোর পূর্বক এক্সভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কাটা শুরু করেন। এতে জমির মালিক পক্ষ বাঁধা দিতে চাইলে সশস্ত্র আসামিরা বন্দুক, পাইপগান ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে । এ সময় বন্দুকের গুলিতে শাহজালাল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র সুমেল আহমদ শুকুর আহত হন। গুলিতে তার শরীর ঝাঁজরা হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। এসময় সুমেলের বাবা-চাচাসহ ৩ জন গুলিবিদ্ধ হন।
হত্যাকাণ্ডের পর সিলেটের তৎকালীন উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) মফিজ উদ্দিন ও সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন এই চাঞ্চল্যকর হত্যার মামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা ও আলামত নষ্ট করার দায়ে বিশ্বনাথ থানার তৎকালীন অফিসান ইনচার্জ ( ওসি) শামিম মুসা ও এসআই নুর ও ফজলুল হককে ক্লোজ করা হয়।
এরপর তৎকালীন বিশ্বনাথ থানার ওসি তদন্ত রমা প্রসাদ চক্রবর্তী দীর্ঘ তদন্ত শেষে ৩২ জনের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর এই মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন। মামলায় মোট ২৩ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন।
এদিকে মামলার আজকের রায়ের পর বাদী সুমেলের চাচা ইব্রাহিম আলী সিজিল সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।