নিজস্ব প্রতিবেদক সিলেট জেলার ওসমানীনগর উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নের খাদিমপুর গ্রামে যুক্তরাজ্য প্রবাসী হাজেরা আলী পান্না ও তার ভাই দিলন মিয়ার বাড়িতে দফায় দফায় হামলা,ভাঙচুর,লুটপাট,চাঁদাবাজি এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে।সর্বোপরি কয়েক দফায় এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়,গত ৩০ এপ্রিল ২০২৫ ইংরেজি এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে প্রবাসী হাজেরা আলী পান্নার বড় ভাই দিলন মিয়া মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত জখমী হন।ওই ঘটনায় ওসমানীনগর থানার মামলা নং-১৭,তারিখ: ৩০/০৪/২০২৫ দায়ের করা হয়।পরে আরও একটি মামলা নং-৬,তারিখ: ০৭/০৫/২০২৫ দায়ের করা হয়।
সম্প্রতি হাজেরা আলী পান্না যুক্তরাজ্যে ফিরে গেলে অভিযুক্তরা ফের ভয়ংকর ভাবে স্বক্রিয় হয়ে উঠে।অপরাধ প্রবণতা সহ হাজেরা আলীর ভূমির উপর লোলোপ দৃস্টি পড়ে একই এলাকার বাসিন্দা ভূমিখেকো,চাঁদাবাজ ও মামলাবাজ গোলাম রাব্বানী সুহেল এর।দীর্ঘদিন থেকে ভূমি আত্নসাৎ সহ এলাকার অনেক মানুষের জায়গাজমি ভূয়া দলিল কাগজাদি তৈরী করে তাহা নিজের নামে দলিল তৈরীর মাধ্যমে মানুষকে গভীর হয়রানি করে থাকেন।১৮ মে (শনিবার) ২০২৫ ইং দিবাগত রাত আড়াইটায় খাদিমপুর গ্রামের গোলাম রব্বানী সোহেলের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী হাজেরা আলী পান্না ও দিলন মিয়ার বাড়িতে হামলা চালায়।হামলাকারীরা বাড়ির পাহারাদার সুমন আহমদকে পাকা পিলারের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করে।এ সময় তারা সিসিটিভি ক্যামেরা, মনিটর, ল্যাপটপ, আসবাবপত্র, নির্মাণসামগ্রী (রড-সিমেন্ট), নিরাপত্তাকর্মীর মোবাইল ও টর্চলাইট লুট করে এবং দু’জন নিরাপত্তাকর্মীকে মারধর করে বেঁধে নিয়ে যায়।আনুমানিক ক্ষয়ক্ষতির মূল্য ১০ লক্ষ টাকা।
এ ঘটনায় পাহারাদার সুমন আহমদ বাদী হয়ে ওসমানীনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন কিন্তু কোনো আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় নাই।
অভিযোগে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন গোলাম রব্বানী সোহেল,আওয়ামীলীগ নেতা জুয়েল মিয়া,রনি মিয়া সহ ১১ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্য প্রবাসী হাজেরা আলী পান্না'র সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন,“আমার অনুপস্থিতিতে বারবার আমার বাড়িতে হামলা চালানো হচ্ছে।সংবাদ সম্মেলন সহ আইনি প্রতিকার পাওয়ার জন্য আমরা মামলা করেছি কিন্তুু চতুর প্রতিপক্ষ সুহেল আমাকে সহ আমার পরিবার ও মামলার স্বাক্ষীগণকে বিভিন্ন মিথ্যা কাউন্টার মামলা দিয়ে হয়রানি করে যাচ্ছে।থানা প্রশাসনের কয়েক দূর্নীতিবাজ অসাধু কর্মকর্তাকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে আমাদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা অব্যাহত রয়েছে।আমাদের কাছে যাবতীয় ডকুমেন্টস রয়েছে তদন্তকালে উত্তাপন করিব।ইদানিং থানা প্রশাসন আমার মামলাগুলোকে ফেলে রেখে আসামীদের দায়ের করা মিথ্যা কাউন্টার মামলাগুলো দিয়ে প্রভাবিত হয়ে এক তরফা আমাদের বিরুদ্বে ধরপাকড় সহ হুমকি-ধামকি দেওয়া এবং বিভিন্ন প্রকার হয়রানি করা অব্যাহত রাখছেন।এতে আমরা ভীতসন্ত্রস্ত ও আতংকিত হয়ে পড়েছি।আমি চাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিস্টা হোক।আমারা প্রবাসীরা দেশে গিয়ে নিরাপদ না,দেশে বাড়ি ঘর ও জায়গা জমি কোন কিছুই নিরাপদ না,আমি ওসমানী নগর থানা সহ উর্ধ্বতন পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সাবেক মেম্বার জিতু মিয়া বলেন,এই এলাকার গোলাম রাব্বানী সুহেল দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মানুষকে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে হয়রানি করে আসছেন।ডিসির খতিয়ানের কিছু জায়গাও তিনি নিজের বলে দাবী করে আসছেন।যারাই তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন তাদের বিরুদ্ধেই গোলাম রাব্বানী সুহেল নিজে কিংবা তার পক্ষের লোকদের বাদী করে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে থাকেন নিরীহ মানুষকে।যারা স্বাক্ষী দেয় তাদের বিরুদ্ধেও তিনি আসামি করে মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেন।এতে সুহেল একজন এলাকার ত্রাস হিসেবে ইতিমধ্যে সকলের কাছে এক আতংকের নাম।সুহেলের লোকবল,টাকার অহমিকা ও প্রভাবশালী চক্রের কাছে আমরা অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছি।টাকার কাছে প্রশাসনের কিছু মামলার তদন্ত অফিসার-ও বিক্রি হয়ে যান,এতে মামলার খামখেয়ালি রিপোর্ট ইতিপূর্বে কিছু সংস্থার কর্মকর্তারা প্রদান করেন।এতে আমরা জায়গায় জায়গায় প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ ও আইনি সহায়তা পাওয়ার নিমিত্তে দরখাস্ত দিয়েছি।
এলাকার প্রবীণ মুরব্বি হাজী আছকর মিয়া বলেন,গোলাম রাব্বানী সুহেল এর ভাই গোলাম কিবরিয়া বাদী হয়ে দ্রুত বিচার সি,আর মামলা নং-২৯/২০২৫ ইং এর তদন্ত অফিসার সিলেট জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এর সা-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) হাসিনা আক্তার আঁখি তিনি অপরাধী সুহেল ও কিবরিয়ার যোগসাজশে,প্রভাবশালীতায় ও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে একটি সম্পূর্ণ মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন আমাদের অভিযুক্ত করে সঠিক ও সুষ্টু তদন্ত ছাড়াই একতরফা মনগড়া ভাবে।এই প্রতিবেদনে অনেক নিরীহ ও নিরপরাধ মানুষকে অভিযুক্ত দেখানো হয়েছে যাহা অত্যন্ত কস্টদায়ক।
হাজী ময়না মিয়া বলেন,আমাদের এলাকার কিছু যুব সমাজ বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে!একটাই কারণ তা এলাকার সবাই অবগত রয়েছেন।গোলাম রাব্বানী সুহেল এর ভাই সহ সঙ্গীয়রা মিলে খাদিমপুর এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে সেই সঙ্গে তার বাড়িতেই মাদক ও হিরোইন বিক্রি,সেবন সহ একটি বেপরোয়া সিন্ডিকেট রয়েছে।এই সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়েছে।জাল জালিয়াতি করে অনেক গরীব পরিবারের জায়গাজমি আত্মসাৎ করেছে সুহেল গং,গরীব কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না প্রান ও মামলা হামলার ভয়ে।এই সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা হোসনেআরা বেগম একটি মনগড়া প্রতিবেদন তৈরী করেন,যাহাতে ভূক্তভোগী পরিবার ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন।
প্রবীণ মুরব্বিয়ান,যুবক ও তরুণ প্রায় অর্ধ শতাধিক মানুষ ২৮ সেপ্টেম্বর রবিবার দুপুরে খাদিমপুর এলাকায় প্রত্যক্ষ তদন্তকালে উপস্থিত জনতা গোলাম রাব্বানী সুহেল গংদের আধিপত্য বিস্তার ও অন্যায় অবিচারের বিষয়ে মুখ খুলেন মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে।১০/১২ জনের একটি মিডিয়া টিম নিরপেক্ষ তদন্তকালে গোলাম রাব্বানী সুহেল গং দের খোজ নিয়ে বক্তব্য গ্রহণ করার অনেক চেষ্টা করা হলে তাদের কাউকে পাওয়া যায় নি এবং বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নিলেও তাদের কোনো আত্মীয় স্বজনদেরও মিলেনি।এতে তাদের কারো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি!
ইতিপূর্বে হাজেরা আলী পান্না'র বাড়ীর কেয়ারটেকার কামাল হোসেন ১০ সেপ্টেম্বর সিলেট কোর্টে হাজিরা দিতে গেলে এসআই শফিক ও একজন কনস্টেবল গং মিলে কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে তাকে অন্যায়ভাবে জোরপূর্বক গ্রেফতার করে এবং ৫ দিন জেল হাজতবাসের পর জামিনে বেরুলে তিনি সুবিচার চেয়ে ১৬ সেপ্টেম্বর ও বিভিন্ন তারিখে পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের নিকট দরখাস্ত দিয়েছেন।
মুরব্বি কামাল হোসেন গংরা বলেন,আমাদের দায়ের করা মামলাগুলোর তেমন কোনো অগ্রগতি নেই কিন্তু অপরাধী ও আওয়ামীলীগ নেতা সুহেল এর পক্ষে মামলাগুলো দিয়ে আমাদের নিরীহ লোকদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।আমাদের মারাত্নক ইনজুরি সার্টিফিকেট থাকার পরও ঐ আসামিদের গ্রেফতার না করে উল্টো আমাদের লোকদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত ধরপাকড় পরিচালনা করা হচ্ছে,এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।
এই বিষয়ে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মুশফেকুর রহমান বলেন,বিষয়টি খোঁজ নিয়ে যেটা সঠিক পাওয়া যাবে সেই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হইবে।
সিলেটের পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,আমরা নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে পদক্ষেপ গ্রহণ করিব।
সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম) রফিকুল ইসলাম জানান,আমরা তদন্তের মাধ্যমে যাবতীয় বিষয় গুলো খতিয়ে দেখছি এবং সঠিক বিচারের আওতায় আনতে আমাদের থানা পুলিশ সহ উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত টিম কাজ করছে।অবশ্যই ভুক্তভোগী কেউ যাতে হয়রানি না হন সেই বিষয়ে আমরা কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেছি।
এ বিষয়ে ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোনায়েম মিয়া বলেন,আমরা উভয় পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি এবং মামলাও হয়েছে,তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গোলাম রাব্বানী সুহেল ও হাজেরা আলী পান্না'র মামলার তদন্ত অফিসার আশীষ চন্দ্র তালুকদার ও বিষ্ণু পদ রায় এবং ওসি তদন্ত-কে খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জানতে ঐদিন দুপুর বারোটায় ওসমানী নগর থানায় একটি মিডিয়া টিম উপস্থিত হলে তাদের কাউকে থানায় পাওয়া যায় নাই এবং মোবাইলে কল দিলেও তারা কল রিসিভ করেন নাই।
(পরবর্তী অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য চোখ রাখুন এবং আমাদের সাথে থাকুন)